Home ভাবসম্প্রসারণ ভাবসম্প্রসারণ: চরিত্র মানবজীবনের মুকুটস্বরূপ / চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ |

ভাবসম্প্রসারণ: চরিত্র মানবজীবনের মুকুটস্বরূপ / চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ |

by Curiosityn
1 comment

ভাবসম্প্রসারণ: চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ / চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমান / চরিত্র মানবজীবনের মুকুটস্বরূপ

চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ / চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমান / চরিত্র মানবজীবনের মুকুটস্বরূপ ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব: চরিত্র মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। চরিত্র যেমন অমূল্য সম্পদ তেমন মহামূল্যবান মুকুটম্বরূপ । তাই চারিত্রিক গুণই মানুষকে সত্যিকারের মানুষ করে তােলে, মহৎ করে এবং অমর করে রাখে।

ভাবসম্প্রসারণ: মানবজীবনের উন্নতি, সফলতা ও সার্থকতা বিকাশের জন্য চরিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। চরিত্রবান ব্যক্তি সত্য ও ন্যায়ের অনুসারী। এ ধরনের মানুষ জাগতিক লােভ-লালসা ও মিথ্যা প্রলােভনে কখনাে প্রলুব্ধ হয় না।এরা আপস করে না অন্যায়ের সাথে। এরা সূর্যের মতাে প্রখর, পর্বতের মতাে অচল এবং প্রয়ােজনে বরফের মতাে বিগলিত। চরিত্রবান মানুষ সবার শ্রদ্ধার পাত্র। চরিত্রবান মানুষের সংস্পর্শে এলে যেকোনাে মানুষ সত্য ও সুন্দর পথের সন্ধান পায়। অপরদিকে, দুশ্চরিত্র ব্যক্তি সমাজ, দেশ ও জাতির জন্যে অকল্যাণকর। গাড়ি-বাড়ি, ধন-দৌলত, শিক্ষা-দীক্ষা ও সম্মান সবকিছুই মূল্যহীন হয়ে পড়ে যদি কোনাে লােক চরিত্রহীন হয়। চরিত্রহীন ব্যক্তি তার লােভলালসা ও হিংসা-দ্বেষ দিয়ে সমাজ ও দেশকে কলুষিত করে। তারা সামাজিকভাবে পশুর চেয়ে অধম বলে বিবেচিত হয়। তাদের কোনাে মর্যাদা থাকে না। চরিত্রবান ব্যক্তি তার মনুষ্যত্ব ও বিবেক দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্যে কাজ করে। পক্ষান্তরে, চরিত্রহীন ব্যক্তি বিষধর সাপের মতাে ভয়ংকর। এ ধরনের ব্যক্তিরা প্রয়ােজনে যেকোনাে ভয়ংকর কাজ করতে দ্বিধা করে না। তাই প্রত্যেক মানুষকে জীবনে সফলতার জন্যে দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্যে সাধনার মাধ্যমে উত্তম চরিত্র গঠন করতে হবে। জগৎ-সংসারের সকল জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি তাঁদের মহৎ চরিত্রের জন্যেই স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। তাঁদের উত্তম চরিত্র সকলের আদর্শ। কথায় বলে, সম্পদ হারিয়ে গেলে কখনাে কখনাে পুনরুদ্ধার করা যায়, কিন্তু চরিত্র হারালে তা আর ফিরে পাওয়া যায় না।

চরিত্রবান ব্যক্তি যেমন নিজ জীবনকে আলােকিত ও সুন্দর করে তেমনি সমাজ, দেশ ও জাতিকে আলােকিত করে। তাই কোনাে জাতিকে উন্নত করতে হলে অবশ্যই উন্নত চরিত্রের জাতি গঠন করতে হবে।

একই ভাবসম্প্রসারণের ভিন্ন প্রতিলিপন

মূলভাব : মানুষের সব সম্পদের মধ্যে চরিত্রই বড় সম্পদ। উত্তম চরিত্রের লােক সর্বত্র সম্মান পেয়ে থাকে। পক্ষান্তরে,চরিত্রহীন ব্যক্তি অজস্র ধন সম্পদের অধিকারী হলেও সকলের ঘৃণার পাত্র।

সম্প্রসারিত ভাব : ইংরেজিতে একটি কথা আছে-“The crown and glory of life is character.” চরিত্রমানবের মহার্ঘতম বস্তু, শ্রেষ্ঠতম অলংকার। হাদিসে আছে, “সবচাইতে পূর্ণ ঈমানদার সেই ব্যক্তি যার আখলাক অর্থাৎ চরিত্র।সবচেয়ে ভালাে।” চরিত্র সম্পদ অন্য সকল সম্পদ অপেক্ষা অধিক মূল্যবান। চরিত্র গৌরবে বলীয়ান মানুষ দেবতার মহিমায়পৃথিবীতে বিরাজ করে। চরিত্র মানুষকে ন্যায়, সত্য, সংযম ও শ্রদ্ধাবােধ শিক্ষা দেয় এবং সৎপথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে। চরিত্রবান ব্যক্তি সমাজের শিখাস্বরূপ। সে অর্থসম্পদে দীন হলেও গৌরবে মহান। কথায় আছে, “রাজার জোর অর্থের আর চরিত্রবান ব্যক্তির জোর হৃদয়ের। হৃদয়িক মহিমায় উজ্জ্বল চরিত্রবান ব্যক্তি সদালাপী, বিনয়ী ও জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন। চরিত্রবান ব্যক্তি মহাপুরুষরূপে সমাজে সমাদৃত। পক্ষান্তরে, চরিত্রহীন ব্যক্তি পশুর সদৃশ। সে গন্ধহীন পুষ্পের মতাে। তাই কেউ তাকে সম্মান করে না। কথায় আছে- টাকা কড়ি হারালে কিছুই হারায় না, স্বাস্থ্য হারালে কিছু হারায়; কিন্তু চরিত্র।
হারালে সব কিছুই হারাতে হয়। সুতরাং সমৃদ্ধিময় জীবনের জন্য চরিত্র প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। চরিত্রের মাধ্যমেই ঘােষিত হয় জীবনের গৌরব।

মন্তব্য : মানুষের প্রকৃত পরিচয় তার চরিত্রে। চরিত্রবলেই মানুষ সুন্দর ও সার্থক হয়ে ওঠে।

4.4/5 - (34 votes)

You may also like

1 comment

Refa Tasnia June 2, 2022 - 10:39 pm

Thanks

Reply

Leave a Comment