Table of Contents
লাইফস্টাইল অর্থ কি
আচ্ছা, Lifestyle বা জীবনধারা কি? আর আমাদের বাস্তবজীবনে এর গুরুত্বই বা কতখানি?চলুন জেনে নেওয়া যাক…!
বাহ্যিক সৌন্দর্য বজায় রাখা, একটু পরিপাটি হয়ে চলাফেরা করা, এক কথায় কিছুটা সৌখিনভাবে জীবনযাপন করাটাই হলো লাইফস্টাইল!লাইফস্টাইল বা জীবনধারার এমন ধরনের ব্যাখ্যা একবার হলেও আপনি বা আমি দিয়ে এসেছি।তবে মজার বিষয় হচ্ছে আপনার বা আমার এই ব্যাখ্যাটি পুরোপুরি সঠিক নয় আবার পুরোপুরি ভুলও কিন্তু নয়।এই ব্যাখ্যাটি মার্জিত লাইফস্টাইলের একটা অংশ মাত্র..!তাহলে লাইফস্টাইলের সঠিক ব্যাখ্যাটা কি?
মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারা মূলত কেমন?
সহজভাবে চিন্তা করলে লাইফস্টাইল হচ্ছে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের নিয়ম বা অভ্যাসগুলোর একটা সমষ্টি। আমাদের সবার প্রতিদিনের কাজ ও সাধারণ কিছু অভ্যাস এর ওপর ভিত্তি করেই আমাদের জীবনধারা বা লাইফস্টাইল বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়।আমাদের সবারই যেহেতু প্রতিদিনের কাজ ও অভ্যাসগুলোর ভিন্নতা রয়েছে, সেহেতু আমাদের সবারই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন লাইফস্টাইল।
প্রয়োজনের তাগিদে ভিন্ন দেশী ও ভিন্ন ভিন্ন পেশার মানুষ তাদের নিজেদের জীবনকে সহজ করা ও পরিস্থিতি সাথে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার লক্ষে নানা নতুন ও ভিন্ন ভিন্ন অভ্যাস গড়ে তোলে।তাই সকল দেশ বা সকল পেশার মানুষের লাইফস্টাইলও ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন আমাদের বাংলাদেশের মানুষেরা যেসব কাজের মাধ্যমে আমাদের সকালটা শুরু করি,পশ্চিমা বিশ্বের মানুষেরা নিশ্চই একইভাবে তাদের সকাল শুরু করবে না..!
আবার একজন শিক্ষার্থী যেভাবে তার সারাদিনে চলাফেরা, ব্যবহার, খাওয়াদাওয়া করে;একজন চিকিৎসক নিশ্চই তার মতো করে চলাফেরা,ব্যবহার,খাওয়াদাওয়া করেন না..!এমন ভিন্নতার কারণেই এক এক জনের লাইফস্টাইল ভিন্ন ভিন্ন হয়।
লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে শরীর ও স্বাস্ব্য ভালো রাখা যায় কিভাবে?
আমাদের শরীরের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঠিক রাখার পেছনে কিন্তু আমাদের লাইফস্টাইলের অনেক বড় ভুমিকা রয়েছে।কিন্তু কিভাবে…?
আগেই বলেছি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের নিয়ম বা অভ্যাসগুলোর একটা সমষ্টিই হলো লাইফস্টাইল। আর আমাদের শরীরকে ঠিক রাখার জন্য আমাদের কিছু ভালো অভ্যাস বা মার্জিত কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়।যেমন প্রতিদিন সকালে শরীর চর্চা করা,এটি আমাদের শরীরকে ভালো রাখতে অনেক সহায়ক।
এই সকালের শরীরচর্চার অভ্যাসটাও কিন্তু আামাদের লাইফস্টাইলেরই একটি অংশ। ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস,সঠিকসময়ে ঘুমানোর অভ্যাস ; এসব নানা অভ্যাসের চর্চা করার সাথে সাথেই এই অভ্যাসগুলো আমাদের লাইফস্টাইলে প্রভাব ফেলে ও একটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল গঠনে সহায়তা করে।একটি স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলের ভিত্তিই পারে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে..!
জীবনধারা ও সফলতা
দীর্ঘদিন ধরে একটি সুনির্দিষ্ট ও সুগঠিত লাইফস্টাইলের অনুসরণ,আমাদের জীবনের সফলতা ও ক্যারিয়ার গঠনেও উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখে।কিন্তু সেই লাইফস্টাইল কেমন,আর কিভাবে আমাদের সফলতা এই লাইফস্টাইলের উপরে নির্ভর করবে?চলুন জেনে নিই।
শিক্ষাক্ষেত্র
আমাদের জীবনে আমারা সাধারণত শিক্ষাক্ষেত্র ও কর্মক্ষেত্রের সফলতাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি।শিক্ষাক্ষেত্র হোক বা কর্মক্ষেত্র যেকোনো ক্ষেত্রেই সফলতা নির্ভর করে কাজ ও কাজকে গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে।শিক্ষাক্ষেত্রে সফল হতে হলে প্রয়োজন সময়মতো ও নিয়মমাফিক পড়াশোনা ও তার পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের দিকেও খেয়াল রাখা।
অভিভাবক ও শিক্ষকেরা প্রায়ই শিক্ষার্থীদের রুটিন তৈরি করে,উক্ত রুটিন মাফিক চলার পরামর্শ দেন।এটার উদ্দেশ্য থাকে,তাদের প্রাত্যহিক কাজগুলোকে বিন্যস্ত আকারে সাজিয়ে ও নিয়মিত উক্ত রুটিন মেনে চলার অভ্যাস করিয়ে;তাদেরকে নিয়মশৃঙ্খলার চর্চা করানো।এগুলো ধীরে ধীরে তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।এই অভ্যাসের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের ভিতর গড়ে ওঠে একটি সুগঠিত লাইফস্টাইল। যা সুপ্রভাব ফেলে তাদের শিক্ষাজীবনে।
কর্মক্ষেত্রে
শিক্ষাক্ষেত্র তো হলো,কর্মক্ষেত্রেও কি লাইফস্টাইল এভাবেই ভুমিকা রাখে?
না।শিক্ষাক্ষেত্র ও কর্মক্ষেত্রে লাইফস্টাইল একইভাবে ভুমিকা না রাখলেও কিছু কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।কর্মক্ষেত্রে সফলতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দ্বায়িত্বপরায়ণতা ও দক্ষতা।সকল কাজ ও দ্বায়িত্ব সামলানোর পর,দিনশেষে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার বিষয়টিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুগঠিত লাইফস্টাইল মেনে না চললে যা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।
কাজকে ফেলে না রাখা,সময়মতো কমর্ক্ষেত্রে যাওয়া,কাজকে অবহেলা না করা,সময়ের সঠিক ব্যাবহার করে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা;এগুলো কর্মক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের মূল হাততিয়ার।আর এগুলো দীর্ঘদিন চর্চা করতে থাকলে তা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।যা কর্মক্ষেত্রে সুগঠিত ও কার্যকরী একটি লাইফস্টাইল তৈরিতে ভূমিকা রাখে।আর এমন লাইফস্টাইলই পারে কর্মক্ষেত্রের সফলতা সুনিশ্চিত করতে।
পরিশেষে-
লাইফস্টাইল শুধু দু’একটা জিনিস এর ওপর নয়,বরং আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজের ওপর নির্ভর করে।সকল ভালো অভ্যাস যেমন;কথাবার্তায় মার্জিত ও বিনয়ী ভাব,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা,মার্জিত পোশাকের ব্যাবহার ইত্যাদি আমাদের লাইফস্টাইলকে সুগঠিত ও মার্জিত রাখতে প্রধান ভূমিকা রাখে।একটি সুনির্দিষ্ট ও সুন্দর লাইফস্টাইলই পারে আমাদের জীবনকে সাফল্যমন্ডিত ও সুন্দর রাখতে।আমাদের উচিত আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের জীবনের লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে আমাদের শারীরিক মানসিক উন্নতি ও কর্মক্ষেত্রের সফলতা নিশ্চিত করে একটি মার্জিত জীবন উপভোগ করা।