Sabbir8986 / December 21, 2020
Table of Contents
মানুষ নামে মানুষ হলেও ধীরে ধীরে ‘মানুষ’ শব্দের আগে স্বরবর্ণের ‘আ’ বর্তমানের সিংহভাগ মানুষকে আরও বিশেষভাবে বিশেষায়িত করছে। মানুষ আর জানোয়ার এর মধ্যকার সূক্ষ্ম পার্থক্যটা দিন দিন ঘুঁচে যাচ্ছে। এই জগতে কেউ মনুষত্ব নিয়ে জন্মায় না, তাকে অর্জন করতে হয়। পৃথিবীর সকল স্থানে মানুষ নামক জীব থাকলেও আসল মানুষ খুব কমই দেখা যায়।
উদ্ভিদ ও তরুলতার পরিচয় তাদের নামের মধ্যেই নিহিত, কিন্তু মানুষের বেলায় তা নয়। তাকে অনেক চেষ্টা-সাধনা ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে মানুষরূপে আত্মপ্রকাশ করতে হয় । পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন সৃষ্টি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন— তরুলতা জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই এ নামে পরিচিতি লাভ করে । পশুপাখির ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা; জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই মানুষ মানুষ হয়ে ওঠে না। মনুষ্যত্ব অর্জনের মাধ্যমে মানুষকে মানুষ হয়ে উঠতে হয়। এজন্য মানুষকে ঐকান্তিক চেষ্টা, সাধনা আর মানবীয় বৃত্তির চর্চার দ্বারা মনুষ্যজন্মের সার্থকতা প্রতিপন্ন করতে হয় এবং সত্যিকারের মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে হয়। তাকে পরিশ্রম,জ্ঞানচর্চা, ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে নিজের ও সমাজের কল্যাণসাধনের চেষ্টা করতে হয়। প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব অভাবগ্রস্তদের প্রতি সদয় ব্যবহার ও সহানুভূতি প্রকাশসহ আরও বহুবিধ মানবীয় গুণাবলি অর্জন করতে হয় এছাড়া তাকে স্নেহ-প্রীতি, প্রেম-ভালােবাসা, দয়া-মায়া প্রভৃতি মানবীয় বৃত্তির চর্চাও করতে হয়; সমাজের অন্য দশজনের সঙ্গে স্নেহ-প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হয়। যারা সাফল্যের সঙ্গে এসব কাজ করতে পারে তারাই সত্যিকারের মানুষরূপে সমাজে আত্মপ্রকাশ করে। অন্যদিকে যাদের মধ্যে এসব গুণের অভাব পরিলক্ষিত হয় তারা মানুষ বলে গণ্য হতে পারে না।
তরুলতা ও পশুপাখির কোনাে জীবনসাধনা নেই। তার বৈশিষ্ট্য নির্দিষ্ট; কিন্তু মানুষকে সাধনা ও চর্চার মধ্য দিয়ে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হয়।
FILED UNDER : ভাবসম্প্রসারণ