Sabbir8986 / December 26, 2020
ভাবসম্প্রসারণ: পৃথিবীতে কোনাে কিছু এককভাবে উপভােগ করলে সে জিনিসের যথার্থ মূল্য বােঝা যায় না। আলাে ও অন্ধকারের মতাে বিপরীতরাই একে-অন্যের গুরুত্ব অনুধাবনে সহায়তা করে।
পৃথিবীতে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, সুন্দর ও কুৎসিতের সহাবস্থান। পৃথিবীতে যদি কখনাে সূর্য অস্ত না যায়, তাহলে আলােময় পৃথিবীকে সুন্দরভাবে অনুভব করা যেত না। অন্ধকার আলাে গ্রাস করে বলেই পরদিনে সূর্যোদয় আমাদের কাছে এত আকর্ষণীয়। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনেও একই অবস্থা। আমরা সকলেই জীবনে কীভাবে অধিক সুখ লাভ করা যায় তারই সন্ধান করি। কিন্তু দুঃখের স্পর্শ ছাড়া জীবনে নিরবচ্ছিন্ন সুখ লাভ করা যায় না। দুঃখের যন্ত্রণা দেখে আমরা হতাশায় ভেঙে পড়ি, অনেক সময় আক্ষেপ করি, সৃষ্টিকর্তার কাছে অভিযােগ জানাই। কিন্তু দুঃখ আছে বলেই সুখ এত আদরনীয়। বেদনা-হতাশার পর যখন সুখ ও আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়, তার কোনাে তুলনা নেই। তেমনি অভাব না থাকলে মানুষের প্রগতি থেমে যেত। আবার চাওয়া- পাওয়া বা অতৃপ্তি না থাকলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এত উৎকর্ষ সাধিত হতাে না। জন্মের পর মৃত্যু অবধারিত বলেই জীবন এত মধুময় ও মূল্যবান। তেমনিভাবে অন্ধকার আছে বলেই আলাের গুরুত্ব বেশি। আলাে অন্ধকারকে যতই হেয় করুক না কেন, অন্ধকার আছে বলেই আলাে উজ্জ্বলভাবে আমাদের নিকট ধরা পড়ে। দুঃখ আছে বলে সুখ এত মধুর। দুঃখের যন্ত্রণা না থাকলে সুখের মূল্য উপলব্ধি করা যায় না। কাটা এড়িয়ে যেমন পদ্মফুল তােলা যায় না তেমনি দুঃখ বাদ দিয়ে সুখ লাভ করা যায় না।
আমাদের কঠোর সাধনা ও দৃঢ় মনােবল দ্বারা জীবনের সকল বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করতে হবে। আলাে-অন্ধকার, ভালাে-মন্দ, সুখ-দুঃখ না থাকলে মানুষ কোনাে সাধনাই করত না, দৃঢ় মনােবলের অধিকারীও হতে পারত না। এসব বাধা আছে বলেই মানুষ নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জীবনকে সুন্দর, সার্থক করতে, পৃথিবীকে সুখের আবাস ভূমিতে পরিণত করতে।
FILED UNDER : ভাবসম্প্রসারণ