Sabbir8986 / December 26, 2020
মূলভাবঃ সার্থক জীবন গঠনে বিদ্যাশিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু সেই শিক্ষাকে অবশ্যই হতে হবে জীবনমুখী। শিক্ষাহীন জীবন এবং জীবন-সম্পর্ক বর্জিত শিক্ষা কোনোটিই কাম্য নয়।
ভাবসম্প্রসারণঃ মানবসন্তানকে প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠার জন্য জন্মের পর থেকে জীবনব্যাপী সাধনা করতে হয়। মানুষ হওয়ার সে সাধনায় বিদ্যার্জন তথা শিক্ষালাভ হচ্ছে অন্যতম প্রধান উপায় । বিদ্যার্জন মানুষকে মানবীয় গুণাবলিসম্পন্ন করে। বিদ্যা মানবজীবনের অন্ধকারকে দূর করে জীবনকে সার্থক ও পুণ্যময় করে তােলে। বিদ্বান ব্যক্তি নিজে যেমন মহীয়ান হন তেমনি তার অর্জিত বিদ্যার পুণ্যপ্রভাবে সমাজ ও দেশ হয় সমৃদ্ধ। অপরদিকে সমাজে বিদ্যাহীন লােকের কোনাে সমাদর নেই। বিদ্যা-প্রদেয়। আলাের অভাবে তারা সবদিক থেকে পিছিয়ে থাকে, চোখ থাকতেও থেকে যায় অন্ধ । তাদের কাছ থেকে সমাজ কিছুই আশা করতে পারে না। সর্বোপরি বলা যায়, বিদ্যা মানুষকে জীবনঘনিষ্ঠ আদর্শ মানুষ করে তােলে। বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে মানুষ বৃহত্তর জীবনবােধ থেকে বঞ্চিত হয়। আবার, প্রকৃত বিদ্যাকে হতে হবে জীবনমুখী, কোনােমতেই জীবন-বিবর্জিত নয় । কারণ বিদ্যা যদি জীবনবিমুখ হয় তবে তা জীবনকে আলােকিত করতে পারে না, বরং তা জীবনকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। জীবনবিমুখ বিদ্যা মানুষকে মানুষ করার বদলে অহংকারী অমানুষ করে তােলে। তাই বিদ্যাকে জীবনের বাস্তবানুসারী করে তুলতে হবে। অর্থাৎ জীবনের জন্য যেমন বিদ্যাশিক্ষার প্রয়ােজন তেমনি মানুষ হতে হলে জীবনঘনিষ্ট প্রকৃত বিদ্যা অর্জন করতে হবে । মনীষীদের জীবনের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, জীবনমুখী শিক্ষার মাধ্যমে তারা তাদের জীবনকে সার্থক করেছেন, চারপাশের সমাজ ও বিশ্বকে দান করেছেন জ্ঞান ও আলাে। নিরস ও নিপ্রাণ বিদ্যা কখনােই ব্যক্তিত্বের এমন জাগরণ ঘটাতে পারে না। তাই জীবনকে সার্থক ও মহিমান্বিত করতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই বিদ্যা অর্জন করতে হবে, তবে তা হতে হবে জীবনমুখী প্রকৃত বিদ্যা ।
বিদ্যাহীন জীবন অন্ধকারতুল্য। আবার যে বিদ্যার সঙ্গে জীবনের যােগ নেই তাকে প্রকৃত বিদ্যা বলা যায় না। তাই বিদ্যাহীন জীবন যেমন আমাদের কাম্য হতে পারে না, তেমনি জীবন-সম্পর্কহীন বিদ্যাও অগ্রহণযােগ্য এ দুটো হতে হবে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।
FILED UNDER : ভাবসম্প্রসারণ