Sabbir8986 / December 26, 2020
ভাবসম্প্রসারণ: সুন্দর পৃথিবীতে কর্মমুখর জীবনের জন্যে পরিশ্রম ও বিশ্রাম দুটোই অপরিহার্য। এ যেন চোখ আর চোখের পাতার মতাে একটি অন্যটির সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। পরিশ্রমের মাধ্যমেই জীবনে সফলতা আসে আর বিশ্রাম কাজের শক্তি জোগায়। জীবনে সাফল্য পেতে হলে মানুষকে বহুবিধ কাজ করতে হয়। কঠোর পরিশ্রম ও কর্মসাধনাই একমাত্র পথ, যা মানুষের জীবনকে সার্থক করে তুলতে পারে। আর পরিশ্রম করার শক্তি ও প্রেরণা আসে বিশ্রামের অবকাশ থেকে। জীবনকে সার্থক করে তুলতে পারে। ফুলের পাপড়ি ছুঁয়ে উড়ে বেড়ায় যে প্রজাপতি, সে এক সময় ডানা গুটিয়ে নিশ্চল হয়ে বসে। অন্তহীন নীলিমায় উড়ে বেড়ানাে অবাধ বিহঙ্গা নেমে আসে মাটির বুকে, খানিকটা জিরিয়ে নেয়। যে মানুষটি মাথার ঘাম পায়ে ফেলে গাঁইতি চালিয়ে পাথর ভাঙে, সে হাতিয়ার ফেলে দু দণ্ড দাঁড়ায়। এ যে ক্ষণিক বিরতি। এ যে এতটুকু বিশ্রাম, এ তাে শুধু ক্লান্তি উপশম নয়, নতুন কর্মপ্রেরণায়, নবউদ্যমে উজ্জীবিত হয়ে পরবর্তী কাজের জন্যে প্রস্তুত হওয়া। পরিশ্রম ব্যতীত সময়টুকু হলাে অবকাশ । কাজ জীবনে আনে সমৃদ্ধি। আর বিশ্রাম আনে কাজে উদ্যম, শক্তি ও প্রেরণা । পরিশ্রমের পর শ্রান্ত ও ক্লান্ত দেহকে সুস্থ করে মৃত উদ্যম ফিরিয়ে আনার জন্যে যেমন বিশ্রামের প্রয়ােজন, তেমনি বিশ্রামের পর দেহের কর্মস্পৃহাকে সচল সজীব রাখার জন্যে নিয়মিত শ্রমেরও প্রয়োজন। দেহের পক্ষে একটানা পরিশ্রম যেমন ক্ষতিকর তেমনি একটানা বিশ্রাম মােটেও সুখকর নয়। একটানা বিশ্রাম জীবনকে করে তােলে অলস, অচল ও কর্মবিমুখ। পক্ষান্তরে, একটানা পরিশ্রমের ফলে দেহমনে ভর করে অবসাদ, লুপ্ত হয় দেহের কর্মক্ষমতা! বিশ্রাম কোনাে বিলাসিতা কিংবা কর্মঘণ্টার অপচয় নয়। চোখের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ যেমন চোখের পাতা তেমনি কাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ বিশ্রাম । পরিশ্রম ছাড়া বিশ্রামের কোনাে সার্থকতা নেই। কাজে আত্মনিবেদিত থাকার অজুহাতে বিশ্রামকে অস্বীকার করাও বিবেচনাপ্রসূত নয়।
তাই একতরফা কাজ অথবা একতরফা বিশ্রাম কোনােটাই জীবনের জন্যে কল্যাণকর নয়। কাজের পাশাপাশি বিশ্রাম, বিশ্রামের পাশাপাশি কাজ— এমন ছন্দই জীবনে এনে দেয় সার্থকতা।
FILED UNDER : ভাবসম্প্রসারণ