Home অনুচ্ছেদ শীতের সকাল অনুচ্ছেদ | বাংলা ২য় পত্র অনুচ্ছেদ রচনা

শীতের সকাল অনুচ্ছেদ | বাংলা ২য় পত্র অনুচ্ছেদ রচনা

by Curiosityn
15 comments

প্রশ্নঃ শীতের সকাল নিয়ে বাংলা অনুচ্ছেদ লিখ ।

উত্তরঃ

শীতের সকাল অনুচ্ছেদ ১

ছয় ঋতুর বৈচিত্র্যেপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ ছয় ঋতুর মধ্যে শীতের অবস্থান হেমন্তের পর আর বসন্তের আগে। গাছের ঝরা পাতায় ঘটে শীতের আগমন আর বসন্তের নতুন পাতা জাগিয়ে ঘটে শীতের বিদায়। শীতকাল এ দেশের প্রকৃতির অন্যরকম রূপ, যা সম্পূর্ণভাবে ধারণ করে শীতের সকাল। তেমনি শীতের একটি সকাল উপভােগ করার সুযােগ হয়েছিল এবারের শীতে। ছুটির সুবাদে স্নিগ্ধ একটি সকালের স্পর্শ অনুভব করা সম্ভব হয়েছিল। শীতের সকালে কুয়াশার চাদর পরিবেশকে মনােরম করে তুলেছিল। যখন এই কুয়াশার চাদর ভেদ করে চারদিকে রূপালি আলাে ছড়িয়ে পড়ল, তখন বাড়িঘর, গাছপালা ও প্রকৃতি ঝলমল করে ওঠল । কুয়াশার কারণে পাখিরাও নীড় ছেড়ে বের হয় না, কোলাহলে মেতে ওঠে না। চারিদিক থেকে ভেসে আসে সরষে ফুলের মধুর সৌরভ। এভাবে ব্যস্ততাহীন, ধীর লয়ে আগমন ঘটল শীতের একটি সকালের । উত্তর দিক থেকে হিম শীতল বাতাস বইতে থাকল! যেন দীর্ঘশ্বাসের মতাে গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে শির শির করে এ বাতাস বয়ে যায়। এ বাতাসে পাতাগুলাে কেঁপে কেঁপে উঠল। শীতের সকালে বাড়িতে নানা ধরনের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে গেল। সকাল বেলার রােদে পিঠা খাওয়ার যে আনন্দ, তা সব আনন্দকেই যেন ছাড়িয়ে যায়। এই আনন্দ চারপাশে উৎসবের সমারােহ তৈরি করলেও শীতের সকাল বেলাটা মানুষ লেপ-কাঁথার নিচেই কাটাতে ভালােবাসে। শীতের সকাল অলস আর উৎসবের আমেজে উপভােগ্য হলেও গরিবদের জন্য যে তা কতটা কষ্টের এবার সে বিষয়টি অবলােকন করলাম। গ্রামের কৃষকেরা সকাল হতেই গরু আর লাঙল নিয়ে বের হয়ে যায় মাঠে। তারা খেতে মুগ, মশুর, ছােলা, সরিষার বীজ বােনে। কয়দিন পর যখন সেগুলাের কচি পাতা মাথা উঁচু করে তখন চারদিকে বিরাজ করে এক অপূর্ব স্নিগ্ধতা, কোমলতা। শীতের সকালে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রসের হাড়ি নামায়। খেজুর রসের লােভনীয় মিষ্টি গন্ধে তখন সকলের মন মেতে ওঠে। ছােট ছেলেমেয়েরা সেই সকালের মিষ্টি রােদে বসে গুড় দিয়ে মুড়ি খায়। তবে বুঝতে পারলাম শহর আর গ্রামের শীতের সকালের চিত্র ভিন্ন। গ্রামের তুলনায় শহরে শীতের প্রকোপ তুলনামূলক কম। তাই শহরের মানুষ একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। উঁচু উঁচু দালানকোঠায় বসবাসকারী শহরের মানুষ এজন্য শীতের সকালের স্নিগ্ধতা উপভােগ করতে পারে না। সূর্যের আলাের তীব্রতা বাড়লে দূর হয় শীতের সকালের আমেজ। শীতের সকাল প্রকৃতিকে এক পবিত্র সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে, যা ছড়িয়ে থাকে সারাবেলা।

শীতের সকাল অনুচ্ছেদ ২

আমাদের দেশে ছয়টি ঋতু বিরাজমান। তন্মধ্যে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল শীতকাল। ঋতুচক্রের আবর্তে বাংলাদেশে শীত আসে। হেমন্তের ফসল ভরা মাঠ যখন শূন্য ও রিক্ত হয়ে পড়ে, তখনই বােঝা যায়, ঘন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে শীত আসছে।উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভর করে হাড়ে কাপন লাগিয়ে সে আসে তার নিজস্ব রূপ নিয়ে। প্রকৃতি তখন তার সমস্ত আবরণ খুলে ধারণ করে দীনহীন বেশ। প্রকৃতিতে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্য পূর্ণতা পায় শীত সকালে। শীতের সকালে সর্বত্র ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে। সর্বত্র বিরাজ করে কনকনে ঠাণ্ডা। মাঝে মাঝে ফুয়াশা এতই ঘন থাকে যে, সূর্যরশ্মিও একে ভেদ করতে পারে না। সবকিছু ঝাপসা দেখায়। দূরের জিনিস কদাচিৎ দেখা যায়। সূর্ণ বিলম্বে উঠে বলে মনে হয়। শিশু এবং বৃদ্ধরা সকালে হাড় কাঁপানাে শীতকে ভয় পায়। খুব সকালের ঠাণ্ডা এড়াতে তারা কিছুটা দেরিতে ঘুম থেকে উঠে। সকালে সূর্য যখন উকি দেয় গাছ ও ঘাসের উপর তখন রাতের ঝরা শিশির সােনার মতাে জ্বলল করতে থাকে। শীতের সকালের এক অসাধারণ আকর্ষণ সরষে ফুলের হলুদ মাঠ। সকালের সূর্যালােক যেন তার নিপুণ হাতে প্রতিটি সরষে গাছকে নবরূপে ঢেলে সাজায়। পশু-পাখি সূর্যের আলাে দেখে আনন্দিত হয়। কৃষকরা গরু ও লাঙল নিয়ে মাঠে যায়। তাদের হাতে শােভা পায় তুঙ্কা। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সূর্যের মুখ দেখার জন্য বারবার জানালার ফাঁকে উঁকি মারে। কোথাও বা ছেলেমেয়েরা খড় সংগ্রহ করে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করে, আর হাসি-তামাশায় মেতে উঠে। বৃদ্ধ লােকেরা রোদ পােহায়। কিছু লােক খেজুরের রস বিক্রি করতে বের হয়। অনেকেই ঘরে তৈরি পিঠা ও খেজুরের রস খেতে পছন্দ করে। বেলা বেশি হওয়ার সাথে সাথে শীতের সকালের দৃশ্য ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়। বেলা বেড়ে চলে, কুয়াশা দূরীভূত হয় এবং লােকেরা তাদের নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

শীতের সকাল অনুচ্ছেদ ৩

আমাদের দেশ ছয় ঋতুর দেশ। এ ছয় ঋতুর মধ্যে শীতকাল অন্যতম। বাংলার প্রকৃতিতে শীতের সকাল এক ভিন্নতর রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়। পৌষ ও মাঘ শীতকাল হলেও অগ্রহায়ণের শুরু থেকেই শীতের সকাল দিগন্তের পার বেয়ে গাছপালার উপরে কুয়াশার চাদর জড়িয়ে উপস্থিত হয়। তারপর ক্রমে ক্রমে দিন এগিয়ে চলে, অগ্রহায়ণ, পৌষ পেরিয়ে মাঘে এসে শীতের সকাল তার পূর্ণরূপ প্রকাশ ঘটায়। প্রচণ্ড প্রতাপশালী সূর্যটা কুয়াশার ভারী আবরণে ঢাকা পড়ে। তার লজ্জারাঙা রূপ নিয়ে পূর্ব দিগন্তে উঁকি দেয়। তখন সােনাঝরা এক চিলতে রােদ শীতার্ত শরীরে কি দুর্লভ মনে হয়। এই সময়ে খেজুরের রস, ভাপা পিঠে সবার কাছেই মজাদার হয়ে ওঠে। পেটের ক্ষুধার চেয়ে মনের ক্ষুধা ও চোখের ক্ষুই বড় হয়ে জাগে। গরম পিঠা থেকে যখন ধোঁয়ার মতাে ভাব বেরুতে থাকে, তখন কার না চোখে ক্ষুধা পায়। শীতের সকল প্রকৃতির এক যুবুথুবু মুহূর্ত হলেও খাদ্যের লােভে মনটা চাঙ্গা হয়ে ওঠে। অগ্রহায়ণের আশীর্বাদে ধনী-দরিদ্র প্রায় সবার ঘরেই খাবার থাকে। অভাবের কষ্টটা এই সময় থাকে না। তাই শীতের সকাল বাংলার প্রকৃতিতে এক মজার সময়ই বটে।

শীতের সকাল অনুচ্ছেদ for class 3/4

শীতের সকাল কুয়াশাচ্ছন্ন এবং ঠাণ্ডা। সর্বত্র ঘন কুয়াশা থাকে। মাঝে মাঝে কুয়াশা এতই ঘন থাকে যে, সূর্যরশ্মি একে ভেদ করতে পারে না। সবকিছু ঝাপসা দেখায়। দূরের জিনিস কদাচিৎ দেখা যায়। সূর্য বিলম্বে উঠে বলে মনে হয়। শিশু এবং বৃদ্ধরা সকালের হাড় কাঁপানাে শীতে কষ্ট ভােগ করে। রাতে শিশির পড়ে। যখন সকালে সূর্য উকি দেয়, গাছ ও ঘাসের উপর সেগুলো সােনার মতাে চিকচিক করতে থাকে। কৃষকেরা গরু ও লাঙ্গল নিয়ে মাঠে যায়। ছেলেমেয়েরা খড় সংগ্রহ করে আগুন জ্বালিয়ে তাদের গরম করে। বৃদ্ধ লােকেরা রােদ পােহায়। লােকজন চিড়া, মুড়ি, খই এবং বিভিন্ন প্রকার পিঠা খেতে পছন্দ করে। বেলা বেশি হওয়ার সাথে সাথে শীতে সকালের দৃশ্য ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়। বেলা বেড়ে চলে, কুয়াশা দূরীভূত হয় এবং লােকেরা তাদের নিজ নিজকাজে যেতে শুরু করে।

শীতের সকাল অনুচ্ছেদটি কেমন হয়েছে ? নতুন কিছু সংযোজন করা যায় বা বাদ দেওয়া প্রয়োজন? কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।

আরো দেখুন-

রচনা: শীতকাল
রচনা: একটি শীতের সকাল
রচনা: অতিথি পাখি / পরিযায়ী পাখি
অনুচ্ছেদ: অতিথি পাখি

4.6/5 - (22 votes)

You may also like

15 comments

সাহিল July 9, 2021 - 7:41 pm

একটু বেশি বড় হয়ে গেল প্রথম অনুচ্ছেদটা 😅 তাও খুব ভালো হয়েছে ।

Reply
Bishakha July 24, 2021 - 9:21 pm

Nice

Reply
আরফিন মেহেদী August 9, 2021 - 1:12 pm

Amar theke mone hossa ze ai anussad ta basi boro hoasa.

Reply
আরফিন মেহেদী August 9, 2021 - 1:13 pm

Thank You Very Much.

Reply
Some one August 13, 2021 - 12:47 pm

Really Good.

Reply
Asad November 16, 2021 - 9:50 am

১ম অনুচ্ছেদের ১০ম লাইনে যেখানে বলা হয়েছে রুপালি আলো সেখানে আমার মনে হয় সূর্যের সোনালি আলো বলা উচিত

Reply
Sabbir8986 November 16, 2021 - 10:07 am

যেকোন একটা দিতে পারেন। ধন্যবাদ।

Reply
RJH November 17, 2021 - 12:11 pm

Really Good 😊

Reply
Shajjed Hossain Shagor November 21, 2021 - 9:14 pm

Vai thank you so much

Reply
Sami November 23, 2021 - 10:25 pm

ভালো…🙂

Reply
Fabiha Hossain December 29, 2021 - 7:39 pm

So good..carry on..
And thanks for be with us…

Reply
Akter Howlader April 10, 2022 - 3:57 pm

অনুচ্ছেদ গুলো খুবই ভালো হয়েছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় বানান ভুল আছে। সেগুলো সংশোধন করে দিলে ভালো হয়।

Reply
Imtiaz Ahmmad August 26, 2022 - 9:31 pm

3 numberta valo na hoileo 1,2 valo house.But ektu Boro.Ok no problem thanks

Reply
Curiosityn August 26, 2022 - 11:23 pm

Stay with us.

Reply
Muttaky chowdhury November 30, 2022 - 10:37 pm

এই অনুচ্ছেদগুলো বেশিই বড় but no problem
Thanks

Reply

Leave a Comment