Home রচনা ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা (৭০০ শব্দ)

ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা (৭০০ শব্দ)

by Curiosityn
4 comments

ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনার সংকেত

  • ভূমিকা
  • ছাত্রজীবনের স্বরূপ
  • দায়িত্ব ও কর্তব্য
  • ছাত্রজীবনের মূল উদ্দেশ্য
  • দেশের কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব
  • সমাজ সচেতনতা
  • পিতামাতা ও গুরুজনদের প্রতি কর্তব্য
  • রাজনৈতিক দায়িত্ব
  • উপসংহার

ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য রচনা

ভূমিকা:

মানুষ জ্ঞান আহরণের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জীবনের যে মূল্যবান সময় ব্যয় করে থাকে এককথায় তাকে বলে ছাত্রজীবন । ছাত্রজীবন জীবনের প্রস্তুতি গ্রহণের সময়। এ সময়টিকে জীবনের উজ্জ্বলতম সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ছাত্রজীবনই একটি সফল জীবনের বীজ বপনের সময় বলে এ সময়টির রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য।

ছাত্রজীবনের স্বরূপ:

ছাত্রজীবনে জ্ঞান ও বিদ্যা অর্জনের জন্যে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। পরীক্ষা নামক সুকঠিন প্রাচীর পেরিয়ে একজন ছাত্র লাভ করে বিজয়ের আনন্দ। ছাত্রজীবনে মেনে চলতে হয় শৃঙ্খলা, গ্রহণ করতে হয় অধ্যবসায়ের মূলমন্ত্র । কঠোর অধ্যবসায়ী হতে পারার মধ্যেই ছাত্রজীবনের প্রধান লক্ষণ প্রকাশ পায়। অলস-উদ্যমহীন জীবন ছাত্রজীবনের প্রকৃত পরিচয়কে তুলে ধরতে পারে না। ছাত্রজীবনে নানা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণির বােম্বা গবেষক ও খ্যাতিমান শিক্ষকদের সান্নিধ্য লাভ করে ছাত্রছাত্রীরা। ফলে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরেও শিক্ষার্থী লাভ করে জ্ঞান অর্জনের সুযােগ । ছাত্রজীবনে অর্জিত জ্ঞান ও বুদ্ধি-বিবেচনা পরবর্তী জীবনে ব্যাপকভাবে প্রয়ােগ হয় বলে ছাত্রজীবনই জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হিসেবে বিবেচিত।

দায়িত্ব ও কর্তব্য:

ছত্রাণং অধ্যয়নং তপঃ- অধ্যয়নই ছাত্রজীবনের পরম কর্তব্য। ছাত্রজীবনের সর্বপ্রথম এবং সর্বপ্রধান দায়িত্ব হচ্ছে অধ্যয়ন করা। কারণ পরিশ্রম ও অধ্যবসায় ব্যতীত কোনাে ছাত্র তার জীবনকে আলােকিত করতে পারে না। পৃথিবীর বুকে যারা বিজ্ঞান, শিল্পকলা, সাহিত্য ও অন্যান্য বিষয়ে খ্যাতির স্বর্ণতােরণে আসীন হয়েছেন তাঁদের জীবন পর্যালােচনা করলে দেখা যায়, তারা ছাত্রজীবনে ছিলেন কঠোর অধ্যবসায়ী। অর্থাৎ তাদের ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে তাঁরা ছিলেন সদা সচেতন। ছাত্রজীবনের মূল দায়িত্ব অধ্যয়ন হলেও সময়ানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবােধ, আদব-কায়দা ইত্যাদি মানবিক গুণগুলাে এ সময়েই চর্চা করতে হয়। ছাত্রজীবনের সমস্ত সঞ্চয়ই ব্যক্তি জীবনের পরবর্তী সকল পদক্ষেপে কাজে লাগে। তাই সৎ চরিত্রবান হতে হলে সততার চর্চা করা, সত্যবাদী হওয়া, নিজ কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া ইত্যাদি সৎ গুণগুলাে ছাত্রজীবনে অনুশীলন করা ছাত্রদের কর্তব্য। স্বাস্থ্যই সুখের মূল। তাই ছাত্রজীবনে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়াও ছাত্রছাত্রীদের কর্তব্য। কেননা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হলে তার পক্ষে অধ্যয়ন অনুশীলন কোনােটাই সম্ভব নয়।

ছাত্রজীবনের মূল উদ্দেশ্য:

ছাত্রজীবনের মূল কাজ অধ্যয়ন হলেও মূল উদ্দেশ্য তা নয়। প্রত্যেকটি মানুষের কাজই একটি লক্ষ্য নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া। তেমনি ছাত্রজীবনেরও একটি লক্ষ্য থাকা প্রয়ােজন। শুধু পরীক্ষার পর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একগাদা সনদ অর্জন ছাত্রজীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে না। ছাত্রজীবনের প্রধান লক্ষ্য হবে জ্ঞানার্জন। জ্ঞানার্জন না হলে মানুষ মুক্তচিন্তার অধিকারী হতে পারে না ফলে সংকীর্ণ ও অনুদার দৃষ্টিভঙ্গি হয় তাদের। যা কিনা কোনাে সুশিক্ষিত মানুষের ভূষণ হতে পারে না। তাই ছাত্রজীবনের উদ্দেশ্য হবে নিজেকে জ্ঞানে গুণে বিকশিত করে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তােলা।

দেশের কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব:

আজকের ছাত্রছাত্রীরা আগামী দিনে জাতির নেতৃত্ব দান করবে। এ নেতৃত্ব দান নিছক দায়িত্ব মাত্র
নয়। এ গুরুদায়িত্ব পালনে সক্ষম হতে হলে আজকের ছাত্রকে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যথাযথ যােগ্যতা অর্জন করতে হবে। তাদের নৈতিক চরিত্র হতে হবে সর্বজন। ছাত্রদের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক। জাতিকে সঠিক এবং উন্নয়নের পথে পরিচালনা করার জন্যে তাদের হাতেই একদিন দায়িত্ব বর্তাবে। তাই ছাত্রদের দেশের কর্ণধার হিসেবে নিজকে প্রস্তুত করতে হবে।

সমাজ সচেতনতা:

একজন ছাত্রকে সমাজ সচেতন হতে হবে । ছাত্র যদি তার দেশ, কাল, সমাজ সম্পর্কে সচেতন না হয় তাহলে তার দ্বারা সমাজের হিত কাজ অসম্ভব । সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে কোনাে অন্যায়, অনাচার দুর্নীতি যদি প্রকট আকার ধারণ করে তখন ছাত্রদের বসে থাকলে চলবে না। এর প্রতিকার প্রতিরােধের জন্যে সােচ্চার প্রতিবাদ করাও ছাত্রদের দায়িত্ব। ছাত্রসমাজের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সমাজ-সংসারের কুসংস্কার দূরীভূত হয়ে, অন্যায়-অবিচার তিরােহিত হয়ে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ হতে পারে। তাই ছাত্রজীবনে হতে হবে দেশ, কাল ও সমাজসচেতন, সমাজহিতৈষী।

পিতামাতা ও গুরুজনদের প্রতি কর্তব্য:

পিতামাতা ও গুরুজনদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা ছাত্রদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মনােভাব তাদের নৈতিক দিক থেকে আদর্শবান করে তােলে। গুরুজনের আদেশ-নিষেধ মেনে না। চললে জীবনে উন্নতি অসম্ভব। তাই তাদের দিক নির্দেশনা যথাযথ পালনে ছাত্রদের ব্রতী হতে হবে। পিতামাতা ও গুরুজনদের প্রতি সম্মান ও কর্তব্য সম্পাদনের মধ্য দিয়ে ছাত্ররা শিষ্টাচার চর্চার সুযােগও লাভ করে।

রাজনৈতিক দায়িত্ব:

ছাত্ররা একটি দেশের জাগ্রত অংশ। তাদের কখনাে কখনাে রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ছাত্রদের দেখা গিয়েছে অগ্রণী ভূমিকায়। আমাদের বাংলাদেশের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। অধিকার আদায়েও ছাত্রদের থাকে একটি বড় ভূমিকা। আমাদের মাতৃভাষা হবে আমাদের রাষ্ট্রভাষা— এ অধিকার আদায়ে রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে একদিন কেঁপে উঠেছিল দেশ। ছাত্ররা অধিকার আদায়ে প্রাণ দিয়েছিল । এটি পৃথিবীর একটি উল্লেখযােগ্য ঘটনা। তাই ছাত্রদের রাজনীতি সচেতন হতে হবে, প্রয়ােজনে যেন তারা রাজনৈতিক কর্তব্য পালন করতে পারে।

উপসংহার:

আজ যারা বিদ্যালয়গামী শিশু, কিশাের, তরুণ, তারাই আগামী দিনের দেশের পরিচালক। দেশ ও জাতি তাদের কাছে প্রত্যাশা করে অনেক কিছু। তাই ছাত্রজীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে ছাত্রদেরই হতে হবে অগ্রণী, তাদের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ।

4.2/5 - (163 votes)

You may also like

4 comments

নুসরাত জাহান June 3, 2022 - 8:03 pm

Nice

Reply
labib July 21, 2022 - 6:17 pm

thanks

Reply
Durba August 23, 2022 - 8:45 pm

nice

Reply
Kalyan guriya November 17, 2022 - 11:11 pm

Super 😘🥰💗❤️💗🌞

Reply

Leave a Comment