Sabbir8986 / December 29, 2020
Table of Contents
উত্তরঃ
সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতিকে বশ করে গড়ে তুলেছে নিজের পরিবেশ। প্রকৃতির বহু বিচিত্র দান, মানুষের বুদ্ধি আর নিরন্তর শ্রমের ফলে নির্মিত হয়েছে আধুনিক সভ্যতা। অথচ প্রকৃতির দানকে অস্বীকার করে মানুষ আজ নিজ হাতেই হস করে চলেছে তাকে। মানুষের অসাবধানতা ও লােভের কারণে ভয়াবহভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। পরিবেশ দূষণ মূলত দুটি কারণে হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে প্রকৃতিগত কারণ, যেমন— ঝড়-বন্যা, জলােচ্ছাস, অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প ইত্যাদি। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে মানবসৃষ্ট যা কৃত্রিম, যেমন— পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, তেজস্ক্রিয় দূষণ প্রভৃতি। শিল্পকারখানার বর্জ্য, যানবাহনের বিষাক্ত ধোয়া ইত্যাদি বায়ুতে মিশে দূষিত করছে পরিবেশকে। বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি পােড়ানাের ফলে বাতাসে বেড়ে যাচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ। পৃথিবীর নদনদী, সমুদ্র, পুকুর, খালবিলের পানি প্রতিদিন দূষিত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। কলকারখানার বর্জ্য, ফসলি জমিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক ইত্যাদি পানিকে বিষাক্ত করে তুলছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, যত্রযত্র আবর্জনা ফেলা, জমিতে বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহার ইত্যাদি কারণে বাড়ছে মাটিদূষণ। তাছাড়া গাড়ির তীব্র হর্ণ, মাইকের যথেচ্ছ ব্যবহার, কলকারখানার যন্ত্রের বিকট শব্দ ইত্যাদি শব্দদূষণের মূল কারণ। সব মিলিয়ে পরিবেশ দূষণ বর্তমানে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের মতাে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলােতে দূষণের মাত্রা আরও ভয়াবহ। পরিবেশ দূষণের ফলে বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর জলবায়ু । গ্রিনহাউজ ইফেক্টের কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। বিভিন্ন ধরনের দুরারােগ্য রােগ-ব্যাধির প্রকোপ বাড়ছে। মােটকথা দূষণের কারণে সারাবিশ্বের পরিবেশই আজ হুমকির সম্মুখীন। পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সচেতনতাই মুখ্য। কলকারখানা, যানবাহনসহ আধুনিক সমস্ত সুযােগ-সুবিধাকে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তােলার বিকল্প নেই। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযােগ্য শক্তির উৎস খুঁজে বের করে এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রচুর গাছপালা রােপণ করে পরিবেশকে সবুজে ভরিয়ে তুলতে হবে। এছাড়া পরিবেশ দূষণ রােধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বসবাস উপযােগী প্রাকৃতিক পরিবেশ হারিয়ে গেলে মানুষসহ সকল জীবের জন্যেই পৃথিবীতে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
পরিবেশ দূষণ বলতে পরিবেশের মৌলিক উপাদান যথা-মাটি, পানি, বায়ু ও জীবের স্বাভাবিক গঠন বিনষ্ট হয়ে যাওয়াকে বােঝায়। অন্যভাবে বলা যায়, পরিবেশ যদি জীবকুলের বসবাসের অযােগ্য হয়ে উঠে, তবে তাকে পরিবেশ দূষণ বলে। সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষ প্রকৃতিকে বশ করে গড়ে তুলেছে নিজের পরিবেশ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ পেয়েছে আরও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য। কিন্তু আবিষ্কৃত জিনিসের অপব্যবহার ও ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশে শুরু হয়েছে দূষণ। মানুষই পানি-মাটি-বাতাসকে করে তুলেছে দূষিত। পরিবেশ দূষণ মূলত দুটি কারণে হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে প্রাকৃতিক কারণ, যেমন- বন্যা, অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প ইত্যাদি। অপরটি হচ্ছে কৃত্রিম বা মানবসৃষ্ট। যেমন- পানিদূষণ, মাটিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, তেজস্ক্রিয় দূষণ ইত্যাদি। প্রাকৃতিক দূষণের চেয়ে কৃত্রিম বা মানবসৃষ্ট দূষণই অধিক হারে হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বের প্রধান সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আমাদের শহরগুলােতে কল-কারখানা ও মােটরযান থেকে নির্গত ধোয়া দ্বারা পরিবেশের অন্যতম উপাদান বায়ু দূষিত হচ্ছে। পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পানি নর্দমার অব্যবহৃত আবর্জনার কারণে দূষিত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন শিল্পের বর্জ্য এবং কৃষিজমির রাসায়নিক সার ও কীটনাশক আশঙ্কাজনকভাবে পানিকে দূষিত করছে। দূষণের আরেকটি রূপ হচ্ছে শব্দদূষণ। মােটরযান, গৃহের যন্ত্রপাতি, রেডিও, সিডি প্লেয়ার, মাইক প্রভৃতির শব্দের কারণে এটি ঘটে থাকে। যে বাতাসে আমরা শ্বাস নিই, যে পানি আমরা পান করি, যে খাদ্য আমরা খাই, পরিবেশ দূষণের কারণে তা আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতিসাধন করে থাকে। পরিবেশ দূষণ পরিবেশের ভারসাম্য তথা মানবজাতির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। পরিবেশ দূষণ ক্রমাগত আমাদেরকে নীরবে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছে। তাই সুখী ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হলে পরিবেশ দূষণ অবশ্যই রােধ করতে হবে। এ জন্য আমাদের সচেতনতার কোনাে বিকল্প নেই। সরকারেরও উচিত পরিবেশ দূষণ প্রতিরােধে কঠোর আইন প্রণয়ন করা। আর তা হলেই আমরা একটি সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশে বসবাসের নিশ্চয়তা পাব।
পরিবেশ দূষণ অনুচ্ছেদটি কেমন হয়েছে ? নতুন কিছু সংযোজন করা যায় বা বাদ দেওয়া প্রয়োজন? কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
FILED UNDER : অনুচ্ছেদ