Table of Contents
অধ্যবসায় রচনার সংকেত(Hint)
- ভূমিকা
- অধ্যবসায়ের স্বরূপ
- অধ্যবসায়ের প্রয়ােজনীয়তা
- ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়
- ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়
- প্রতিভা ও অধ্যবসায়:
- অধ্যবসায়ের দৃষ্টান্ত
- অধ্যবসায়ের ফল
- উপসংহার
অধ্যবসায় রচনা লিখন
ভূমিকা:
প্রতিটি মানুষই চায় তার স্বপ্নপূরণের পথে সফল হতে। তবে স্বপ্নপুরণ কারাে পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে আবার কারাে কাছে তা থেকে যায় অধরা। যারা সফল হন তারা সকলেই অধ্যবসায়ী। সফলতার পেছনে একাগ্রচিত্তে নিরন্তর ছুটে চলেন তারা। সম্মুখে বাধা এলেও পিছপা না হয়ে ধৈর্যসহকারে গন্তব্যে পৌছার বিরামহীন প্রচেষ্টাই অধ্যবসায়।
অধ্যবসায়ের স্বরূপ:
বর্তমান পৃথিবী আধুনিক সভ্যতার ধারক। পৃথিবীর মানুষ একদিনে এ অবস্থায় উপনীত হয়নি। গুহাবাসী মানবজাতি হাজার বছরের সাধনা দিয়ে সাজিয়েছে তার প্রিয় আবাস এ পৃথিবীকে । শত-সহস্র বিরুদ্ধ শক্তিকে পরাজিত করে মানুষ আজ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে । নিরলস সাধনা আছে বলেই মানুষ ছুটে চলেছে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে। নাসা হাউজে বসে রিমােট কনট্রোলে মহাশূন্যে নভােযান পাঠাচ্ছে মানুষ। নভােযান কর্তৃক প্রেরিত নানা রকম ছবি কৌতুহল মেটাচ্ছে মানুষের । এ সব কিছুর পেছনে আছে বহু বছরের পরিশ্রম। কত কত নভােযান মহাশূন্যেই বিলীন হয়েছে । কত আকাশচারীই মহাশূন্যের সীমা খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। কিন্তু মানুষ পরাজয় মানতে রাজি নয় । মানুষ দূর চাদের ধুলােয় এঁকে দিয়েছে তার পদচিহ্ন। মঙ্গলের মাটি খুঁড়ে নভােযান ফিনিকু পৃথিবীবাসীর জন্যে বয়ে এনেছে নতুন বার্তা । নিয়ত বৈরী পরিবেশকে ডিঙিয়ে জয়ী হবার পুনঃপুন এ প্রচেষ্টাই অধ্যবসায়। পৃথিবী আজ এত সাজে সজ্জিত এ অধ্যবসায়েরই ফলে।
অধ্যবসায়ের প্রয়ােজনীয়তা:
জীবনে সফল হতে গেলে অধ্যাবসায়ের বিকল্প নেই । যুগে যুগে যে সকল ব্যক্তি সুখ্যাতির উচ্চ শিখরে আরােহণ করেছেন তাঁদের সফলতার পেছনে অধ্যবসায় বড় ভূমিকা পালন করেছে । বড় বড় শিল্পী, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, সেনানায়ক, ধর্মপ্রবর্তক সকলেই ছিলেন অধ্যবসায়ী। তাঁরা বারবার ব্যর্থ হয়েও অক্লান্ত পরিশ্রম করে অসীম ধৈর্য সহকারে নিজ নিজ আদর্শের পথে অগ্রসর হয়েছেন।
ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়:
ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়ের বিকল্প নেই। মানুষের জীবন নির্মাণের প্রস্তুতিপর্ব ছাত্রজীবন। তাই যে ছাত্র। যত বেশি অধ্যবসায়ী সে তত সুন্দর জীবনের অধিকারী হয়। যার ছাত্রজীবন আলস্যে পরিপূর্ণ তার পক্ষে কোনােকালেই নন্দিত জীবনের তৃপ্তিভােগ করা সম্ভব নয়। ছাত্রজীবনের প্রস্তুতিই জীবনের পরিপূর্ণতাকে নির্ধারণ করে। তাই গৌরবময় জীবনের অধিকারী হতে হলে ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়ী হতে হবে ।
ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনে অধ্যবসায়:
ব্যক্তিজীবনে মানুষ সকলেই স্বতন্ত্র। বুদ্ধিমত্তা ও শক্তির দিক থেকে সকলেই অসমান। কিন্তু সকলেই উচ্চ জীবনের মহিমা কামনা করে। সে ক্ষেত্রে যদি অধ্যবসায়ের যথার্থ প্রয়ােগ ঘটানাে যায় তবে শক্তির স্বল্পতা সাফল্যের পথে অন্তরায় হয়ে ওঠে না। তাই আত্ম-উন্নয়নের জন্যে চাই অধ্যবসায়। পক্ষান্তরে, জাতীয় জীবনেও গৌরব প্রতিষ্ঠা করতে হলে জাতিকে অধ্যবসায়ী হতে হবে। ব্যক্তির অধ্যবসায় জাতির জন্যে বৃহত্তর কল্যাণ বয়ে আনে। নিতান্ত ক্ষুদ্র ব্যক্তি থেকে আবিষ্কারক, বীরপুরুষ, সমাজ সংস্কারক, রাষ্ট্রনায়ক, শিল্পী, সাহিত্যিক হয়ে বিস্ময়কর যে সাফল্য ব্যক্তি লাভ করে তা অন্য অর্থে জাতিরই সাফল্য। তাই গর্বিত জাতি হিসেবে নিজ রাষ্ট্র বা জাতিকে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতেও অধ্যবসায় জরুরি।
প্রতিভা ও অধ্যবসায়:
অনেকে প্রতিভার স্তুতি গাইতে গিয়ে প্রতিভাকে অধ্যবসায়ের ওপর স্থান দেন। বস্তুত সত্য হচ্ছে-প্রতিভা নয়, বরং অধ্যবসায়ই সাফল্যের চাবিকাঠি। যদি এমন কেউ থাকে যে কি না অধ্যবসায়হীন অথচ নিজকে প্রতিভাবান দাবি করে আলস্যে গৃহকোণে পড়ে থাকে তবে তাকে জ্ঞানী বলাই হবে অজ্ঞানীর কাজ। জগতের সকল কীর্তিমানই স্বীকার করেছেন তাদের কৃতকার্যের পেছনে কেবল প্রতিভা ছিল না, ছিল কঠোর অধ্যবসায়ও।
অধ্যবসায়ের দৃষ্টান্ত:
মহা মনীষীদের জীবনচরিত আলােচনা করলে অধ্যবসায়ের দৃষ্টান্ত মেলে। নেপােলিয়ন অধ্যবসায়ী না হলে বলতে পারতেন না, অসম্ভব শব্দটি কেবল বােকাদের অভিধানেই পাওয়া যায়। বিজ্ঞানী নিউটন, আইনস্টাইন, মনীষী কার্লাইল, স্কটল্যান্ডের রাজা রবার্ট ব্রুসসহ জগতের বিভিন্ন মনীষীর জীবনে অধ্যবসায়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বর্তমান। কঠোর অধ্যবসায়ের একটি নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার উদ্ভাবিত ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি বা গ্রামীণ ব্যাংক পদ্ধতি প্রথমদিকে সমাজের একশ্রেণির মানুষের সমালােচনার মুখে পড়ে। উদ্যম না হারিয়ে প্রবল ধৈর্য সহকারে হাল ধরে রাখেন তিনি। আজ তাঁর গ্রামীণ ব্যাংক নােবেল পুরস্কার অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে। বিশ্বের বহু দেশ আজ গ্রামীণ ব্যাংকের মডেলকে অনুসরণ করছে— এর পেছনে রয়েছে নিরলস অধ্যবসায়।
অধ্যবসায়ের ফল:
জগতের সকল সুকীর্তি অধ্যবসায়ের ফল । সুদীর্ঘ অধ্যবসায়ের ফলেই মানুষ আজ উদ্ভাবন করতে পেরেছে রােগ নিরাময়ের এতসব ওষুধ। মানুষের আকাশ ভ্রমণ, মহাকাশে বিচরণ, অত্যাধুনিক মুঠোফোন, কম্পিউটারের বিস্ময়কর ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনের নানা কর্মকাণ্ডকে সহজ করে তুলতে পারা– এ সবই অধ্যবসায়ের ফল।
উপসংহার:
বর্তমান যুগ তীব্র প্রতিযােগিতার যুগ। এ যুগে অধ্যবসায়হীন কোনাে মানুষ নিজকে সফলভাবে তুলে ধরতে পারবে না। ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তাকে অবদান রাখতে হলে অধ্যবসায়কে মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। কেননা মানবজীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
9 comments
Hello. I am student of Mirpur shiddhanto high school. I love to write & imagine.
Wow! what a wonderful essay .
I read in Navy Anchorage School and College Dhaka , in class 6.
I like your essay.
Good writing. Thanks.
wow thanks mate
Nice Post. Thanks for this post sir.
I’m a student of Ideal School and College, Motijheel, Dhaka. The essay is really nice. Some time the language is a bit tough. But overall, it’s nice
Good🙂
Wow🥺💞🥀