Home রচনা বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু রচনা (520 words) | JSC, SSC |

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু রচনা (520 words) | JSC, SSC |

by Curiosityn
0 comment

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু রচনার সংকেত (Hints)

  • ভূমিকা
  • জন্ম ও প্রচলন
  • হা-ডু-ডু খেলার বৈশিষ্ট্য ও সাধারণ নিয়ম
  • জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম
  • হা-ডু-ডু খেলার উপযােগিতা
  • উপসংহার

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু রচনা

ভূমিকা:

বাংলাদেশের নিজস্ব ও প্রাচীন খেলার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ও সমাদৃত খেলা হা-ডু-ডু। ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি বাংলাদেশের জাতীয় খেলার স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের দেশে ক্রিকেট ও ফুটবলের ব্যাপক জনপ্রিয়তার মুখেও লােকজীবনঘনিষ্ঠ খেলা হা-ডু-ডুর অস্তিত্ব অক্ষুন্ন রয়েছে । হা-ডু-ডু স্বীকৃতি পেয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও।

জন্ম ও প্রচলন:

হা-ডু-ডু বাংলাদেশের নিজস্ব একটি খেলা। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এ খেলা বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন— কাবাডি, কাপাটি, ছি খেলা ইত্যাদি। খানিকটা খােলা জায়গায় বছরের যেকোনাে সময় এ খেলার আয়ােজন করা যায় । তবে হা-ডু-ডু খেলা বিশেষভাবে আয়ােজিত হয়ে থাকে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষ্যে। পহেলা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মতাে জাতীয় উৎসবে প্রতিযােগিতা হিসেবে হা-ডু-ডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মরিশাস, মায়ানমার ও আফগানিস্তানেও হা-ডু-ডু অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

হা-ডু-ডু খেলার বৈশিষ্ট্য ও সাধারণ নিয়ম:

হা-ডু-ডু খেলার জন্য ১২.৫ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার চওড়া জায়গার দরকার হয়। মাঝ বরাবর মধ্যরেখা টেনে সমান দু ভাগে ভাগ করে নেয়া হয় জায়গাটি। দু ভাগে অবস্থান করে দু দলের ৭ জন করে খেলােয়াড়। আর ৫ জন অতিরিক্ত খেলােয়াড় মাঠের বাইরে থাকে । নিয়মকানুন বেশ সহজ বলে এ খেলায় প্রতিযােগী হতে পারে যে কেউ। খেলা শুরু হওয়ার আগে দুপক্ষ দূরত্ব বজায় রেখে মুখােমুখি দাঁড়ায়। খেলা শুরু হলে এ পক্ষের একজন খেলােয়াড় মাঝরেখা থেকে দম বন্ধ করে হা-ডু-ডু বা অন্য কোনাে বােল আওড়াতে আওড়াতে বিপক্ষ দলের সীমানায় ঢুকে পড়ে এবং দম থাকতে থাকতে প্রতিপক্ষের এক বা একাধিক খেলােয়াড়কে ছুঁয়ে নিরাপদে নিজের কোর্টে ফিরে আসে। প্রতিপক্ষের যে কজনকে সে ছুঁয়ে আসতে পারে সে কজন ‘মরা’ বলে বিবেচিত হয় এবং খেলা থেকে বেরিয়ে যায় । কিন্তু প্রতিপক্ষের হাতে সে যদি আটকা । পড়ে এবং দম থাকতে থাকতে নিজেকে ছাড়িয়ে স্বস্থানে ফিরে আসতে না পারে তাহলে সে-ই ‘মরা’ বলে বিবেচিত হয়। দু পক্ষই পালাক্রমে দু দুলের খেলােয়াড়কে ‘মরা করতে চায়। প্রতিপক্ষের খেলােয়াড়কে ‘মরা’ করে নিজ দলের ‘মরা খেলােয়াড়কে আবার খেলায় ফিরিয়ে আনা যায়। এভাবে কয়েকবার খেলা চলে এবং জয়ের দিক থেকে যে দল এগিয়ে থাকে সে দল বিজয়ী হিসেবে বিবেচিত হয়। তাছাড়া একবার খেলেও জয়-পরাজয় নির্ধারণ করা যেতে পারে।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম:

বাঙালির লােকজীবনের সাথে ঘনিষ্ঠ এ খেলাটিতে সাধারণভাবে তেমন কোনাে রীতি মেনে চলা হয় না। তবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হা-ডু-ডু খেলার কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। এ নিয়ম অনুযায়ী মাঝখানে পাঁচ মিনিটের বিরতি দিয়ে দু বারে বিশ মিনিট করে মােট পঁয়তাল্লিশ মিনিট খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা পরিচালনায় নিয়ােজিত থাকেন একজন রেফারি, দু জন আম্পায়ার, একজন স্কোরার এবং দু জন সহকারী স্কোরার । জয়-পরাজয় নির্ধারণ করা হয় পয়েন্টের ভিত্তিতে। শারীরিক ওজন আশি কেজির বেশি হলে প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণ করা যায় না ।

হা-ডু-ডু খেলার উপযােগিতা:

হা-ডু-ডু বাংলাদেশের পরিবেশ উপযােগী একটি খেলা। এ খেলায় তেমন কোনাে উপকরণের প্রয়ােজন হয় না, খরচও হয় না বললেই চলে। কিন্তু স্বাস্থ্যচর্চায় হা-ডু-ডু দারুণ উপযােগী খেলা। দম নিয়ে খেলতে হয় বলে হা-ডু-ডু খেলােয়াড়দের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বেশি থাকে। খেলাটিতে শরীরিক দক্ষতা ও উপস্থিত বুদ্ধি প্রয়ােগেরও যথেষ্ট সুযােগ রয়েছে। সর্বোপরি খেলাটি দর্শকদের নির্মল আনন্দ জোগায়।

উপসংহার:

বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী খেলা হা-ডু-ডু আন্তর্জাতিক খেলার স্বীকৃতি পাওয়ায় এর মর্যাদা আরও বেড়েছে। সাফ গেমস ও এশিয়ান গেমসে খেলাটি অন্তর্ভুক্ত বলে বাংলাদেশের মর্যাদাও এর সঙ্গে জড়িত। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হা-ডু-ডু খেলায় অংশগ্রহণ ও বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের নাম নতুনভাবে ছড়িয়ে পড়ার সুযােগ রয়েছে। তাই এ খেলায় দক্ষতা অর্জনের জন্যে দরকার নিয়মিত এর চর্চা। ব্যাপকভাবে খেলাটির আয়ােজন করা হলে এবং নিয়মিত চর্চা করলে বাংলাদেশের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী এ খেলায় সাফল্য অর্জন কঠিন নয়।

4.1/5 - (14 votes)

You may also like

Leave a Comment