Sabbir8986 / December 26, 2020
ভাবসম্প্রসারণ: পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের ভাষা প্রচলিত। তারপরও মাতৃভাষা ছাড়া অন্য কোনাে ভাষায় মনের ভাব প্রকাশে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যবােধ করে না। মনের ভাব সুন্দরভাবে সহজে প্রকাশ করতে পারে না। একমাত্র মাতৃভাষা দ্বারাই মনের সূক্ষাতিসূক্ষ্ম ও গভীর ভাবগুলাে সুন্দর, সাবলীল ও যথাযথভাবে প্রকাশ করা যায়। মাতৃভাষার সংযােগ মানুষের হৃদয়ের সাথে।
মানবমনের বিচিত্র অনুভূতি ও আবেগ প্রকাশ পায় ভাষারই মাধ্যমে। এক এক দেশের এক এক জাতি বিভিন্ন ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করে। মানুষ প্রয়ােজনে বিদেশি ভাষা শিখলেও সেই ভাষাকে সে অন্তরের গভীরে লালন করতে পারে না। কারণ ছােটবেলা থেকে সে মায়ের মুখে যে বুলি শেখে সেটাই তার মাতৃভাষা বা স্বদেশি ভাষা। এ মাতৃভাষার মাধ্যমে মানুষ তার মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখ, আবেগ-অনুভূতি যেভাবে অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারে অন্য ভাষার সাহায্যে সে তা পারে না। মাতৃভাষা মানুষের প্রাণের ভাষা, এ ভাষা জড়িয়ে আছে রক্তের সাথে । মানুষ বিদেশি ভাষায়ও মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে প্রথমে মাতৃভাষায় অনুধাবন করে নিয়ে তারপর প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু মাতৃভাষার মাধ্যমে মানুষ তার অন্তরের একান্ত অনুভূতিগুলাে যেভাবে অন্যের কাছে প্রকাশ করতে পারে অন্য কোনাে ভাষা দ্বারা তা সম্ভব নয়। তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজ দাদা বলেছেন, “আগে চাই মাতৃভাষার গাঁথুনি, তারপর ইংরেজি শেখার পত্তন। মাতৃভাষার মাধ্যমে শিশুর বিকাশ সহজ হয়। শিশুর কচি মনে মায়ের ভাষার প্রভাব বেশি থাকে। যার কারণে তার উপলব্ধি জ্ঞান ও প্রকাশ ক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি লাভ করে। বিদেশি ভাষাতে মনের ভাব প্রকাশ করা যায় না, এমন নয়। তবে মাতৃভাষার মতাে সাবলীল সুন্দর ও আনন্দের সঙ্গে করা যায় না। মা, মাটি ও মাতৃভাষা এক সূত্রে গাঁথা। মাতৃভাষা রক্ষা করার জন্যে বীর বাঙালিরা রক্ত দিতেও দ্বিধা করেনি। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি।
মাতৃভাষা মানবমনের সম্পূর্ণ আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করার সবচেয়ে উপযুক্ত বাহন। তা মনের সকল আবেগ, অনুভূতি, উপলদ্ধিকে সবচেয়ে ভালােভাবে প্রকাশের ক্ষমতা রাখে।
FILED UNDER : ভাবসম্প্রসারণ