Sabbir8986 / December 26, 2020
ভাবসম্প্রসারণ: পৃথিবীতে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার কোনাে শেষ নেই। সেই কারণে অভাবেরও শেষ নেই। যার যত আছে,তার চাহিদা তত বেশি। কিন্তু মানুষ যদি দুঃখকষ্টে জর্জরিত অন্যের কথা ভাবে তাহলে তার না পাওয়ার দুঃখ লাঘব হয়। অন্যের দুঃখকষ্টকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারলেই নিজের দুঃখকষ্ট তখন তুচ্ছ বা সামান্য হয়ে যায়।
অভাব ও জীবন একটি আরেকটির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। জীবন চলার পথে মানুষকে নানা অভাবের মুখােমুখি হতে হয়। মানুষ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে নানা অভাবের সাথে লড়াই করে চলেছে। আবার অস্তিত্বের এ সংগ্রামে টিকে থাকার প্রয়ােজন থেকেই অভাবের সৃষ্টি। কারণ মানুষ যত পায় তত চায়। মানুষের মধ্যে সর্বদাই চাই চাই মনােভাব বিরাজমান। একটি অভাব পূরণ হলে আরেকটির অভাব দেখা দেয়। অর্থাৎ অনেকগুলাে জামাকাপড় থাকার পরও নতুন বা আধুনিক ডিজাইনের কোনাে পােশাক দেখলে তা কেনার প্রবল ইচ্ছা জাগে, সামর্থ্য থাকলে ক্রয় করা হয় আর না হলে মন হাহাকারে ভরে ওঠে। কিন্তু যার সামান্য লজ্জা নিবারণের কাপড়ও নেই বা একমাত্র সন্তানকে একটি ভালাে জামাও ক্রয় করে দিতে পারে না তার কথা ভাবলে নিজের মনের অভাবের ক্ষোভ তখন সামান্য হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দেশে অসংখ্য মানুষ দরিদ্র। এরা থাকা-খাওয়ার প্রচণ্ড কষ্টে ভােগে। এরা পারে না সন্তানের কোনাে চাহিদা পূরণ করতে, পারে না দিতে সামান্য আনন্দ। আমরা এদের কথা না ভেবে নিজের অভাব ও চাহিদা পূরণে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ি। নিজের প্রয়ােজনকেই বড় করে দেখি। ফলে
অভাববােধ আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। আমাদের সকলেরই উচিত দেশ ও সমাজের দুঃখকষ্টে জড়িত মানুষের কথা ভাবা। তাহলেই নিজের অভাববােধ মন হতে দূর হয়ে যাবে।
নিজের অভাবের কথা না ভেবে ভুক্তভােগী মানুষের অভাবের কথা সকলেরই ভাবা উচিত। মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে এবং হৃদয় দিয়ে যদি অন্যের অভাবকে আমরা দেখি তাহলে নিজের অভাব তখন অতি তুচ্ছ বলে মনে হবে।
FILED UNDER : ভাবসম্প্রসারণ