Home ভাবসম্প্রসারণ ভাবসম্প্রসারণ: বেঁচেও মরে যদি মানুষ দোষে মরেও বাচে যদি মানুষ ঘােষে

ভাবসম্প্রসারণ: বেঁচেও মরে যদি মানুষ দোষে মরেও বাচে যদি মানুষ ঘােষে

by Curiosityn
0 comment

বেঁচেও মরে যদি মানুষ দোষে মরেও বাচে যদি মানুষ ঘােষে ভাবসম্প্রসারণ

ভাবসম্প্রসারণ: কর্মের দ্বারাই নিণীত হয় মানুষের অবদান ও অমরত্ব। অসৎ কর্মের মাধ্যমে মানুষ জীবিত অবস্থায় নিন্দিত হয়। আর মহৎ কর্মে অবদানের জন্যে মানুষ অমরত্ব লাভ করে। মানুষ সীমাবদ্ধ জীবনের অধিকারী। জন্মের পর থেকে মানবজীবনে বিকাশের যে ধারা সূচিত হয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তার অবসান ঘটে। এ জীবন-মৃত্যুর ধারা যুগ-যুগান্তর ধরে প্রবাহমান রয়েছে। সে ধারায় কত মানুষ যে পৃথিবীতে আসছে এবং পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই। মৃত্যুর মধ্যদিয়ে মহাকালের গর্ভে মানুষের শারীরিক অস্তিত্ব বিলীন হলেও সব মানুষ চিরতরে হারিয়ে যায় না। কল্যাণকর ও সৃষ্টিশীল মহৎ অবদানের মাধ্যমে অনেক মানুষই আমাদের কাছে প্রতিপন্ন হয় মৃত্যুঞ্জয়ী মানুষরূপে। যুগ-যুগান্তরে তারা মানুষের শ্রদ্ধা ও প্রশংসার ধারায় নন্দিত হন সক্রেটিস, শেক্সপিয়ার, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম এমন ধরনের মানুষ যারা আমাদের কাছে চির অমর হয়ে আছেন। পক্ষান্তরে, পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষই জন্মে, যারা শুধু নিজের বেঁচে থাকাকেই সর্বোত্তম ভাবনা হিসেবে নেয়। নির্গণ, দুশ্চরিত্র ও মানবতাবিরােধী এসব মানুষ জীবিত অবস্থায় মানুষের চোখে মর্যাদা পায়। বরং নিন্দার অধিকারী হয়। মানুষের ঘৃণা ও অবজ্ঞায় তারা পরিণত হয় পতিত মানুষে। হিটলার, মীরজাফর, কিংবা সীমারের মতাে মানুষ জীবিত অবস্থাতেই মানুষের ঘৃণার আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল। এখনাে এদের নাম ঘৃণার সাথে উচ্চারিত হয় মানুষের মুখে । এদের জীবন বৃথা। মানবতা এদের দ্বারা অপমানিত হয়েছে, এরা মানুষ হয়েও পশুজীবনের অভিশাপে কলুষিত। তাই জন্ম-মৃত্যুর উর্ধ্বে হলাে মানুষের সঙ্কর্মের স্থান। সকর্মশীল মানুষের কীর্তিগাথা মানুষের স্মৃতিতেও প্রশংসায় চিরদিন টিকে থাকে ।

আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর মানুষকে কেউ চরিত্রবানের মর্যাদা দেয় না। জীবদ্দশায় এরা ঘৃণা ও নিন্দার পাত্র হয়। পক্ষান্তরে সৎকর্মশীল মহৎ মানুষরা মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকেন; তারা লাভ করেন অমরত্ব।

3.3/5 - (3 votes)

You may also like

Leave a Comment