Home রচনা মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা (৭০০ শব্দ) | JSC, SSC |

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা (৭০০ শব্দ) | JSC, SSC |

by Curiosityn
1 comment

Table of Contents

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনার সংকেত (Hints)

  • ভূমিকা
  • বিজ্ঞানের কল্যাণধর্মী অবদান
  • চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  • যােগাযােগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  • বিজ্ঞানের বিস্ময় কম্পিউটার
  • মানবকল্যাণে বিদ্যুৎ
  • বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক প্রভাব
  • উপসংহার

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা

» বিজ্ঞানের জয়যাত্রা » বিজ্ঞান ও আধুনিক জীবন » দৈনন্দিন ও প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান » সভ্যতার অগ্রগতিতে বিজ্ঞানের অবদান » মানবকল্যানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি » বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ভূমিকা:

বিজ্ঞান আজকের বিশ্বের মানুষের কাছে খুলে দিয়েছে বিস্ময়কর সাফল্যের দ্বার। মানুষের জীবনকে সহজ থেকে আরও সহজ করে তােলার কাজে বিজ্ঞানের অবদান সবার ওপরে । আজকের মানবজীবন বিজ্ঞাননির্ভর। মানুষের কর্মপদ্ধতি এখন বিজ্ঞান নিয়ন্ত্রিত। মানুষ এখন সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখছে বিজ্ঞানকে ভিত্তি করেই । দিনে দিনে বিজ্ঞান তার আবিষ্কারকে অব্যাহত রেখেছে আর সাধিত হচ্ছে মানবকল্যাণ। মানবের সেবা ও কল্যাণে বিজ্ঞান সদা তৎপর।

বিজ্ঞানের কল্যাণধর্মী অবদান:

পৃথিবীর মানুষ একদিন বিজ্ঞান সাধনায় মনােনিবেশ করেছিল তার নিজের প্রয়ােজনে। নিজের প্রয়ােজন ও সুখকর জীবনের তাগিদ থেকেই বিজ্ঞানের চর্চা আজও প্রবহমান। মানুষ সাধনা করে সে বিজ্ঞান থেকে আবিষ্কারগুলােকে ঘরে তুলেছে তা মানব বসতির সকলের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্যই । জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞানের আছে তাই গৌরবজনক অবদান। বিজ্ঞানের কোনাে আবিষ্কার বা অবদান যদি মানুষের হিতে ব্যয়িত না হয়ে অকল্যাণে ব্যয়িত হয়। তাহলে সে দোষ বিজ্ঞানের হবার কথা নয়। মানুষ নিজেকে সবচেয়ে বেশি ভালােবাসে। অতএব, নিজের জন্য যে উদ্ভাবন তা নিঃসন্দেহে কল্যাণের সাথেই সম্পৃক্ত। বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কারের বর্ণনার মধ্য দিয়ে মানবকল্যাণের সাথে এর সম্পৃক্ততাকে তুলে ধরতে আমরা সচেষ্ট হব।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান:

মানুষ অসুখে পতিত হয়। এ অসুখ থেকে মুক্ত হয়ে সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চায়। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান মানুষকে বাচতে সাহস যুগিয়েছে। মরণব্যাধি যক্ষ্মা ও ক্যান্সারের মতাে রােগের প্রতিষেধক ও ওষুধ আবিষ্কার করে মানুষ চিকিৎসা বিজ্ঞানে আলােড়ন সৃষ্টি করেছে। মানুষের পক্ষে কোনােকালেই মরণকে জয় করা সম্ভব নয়। কিন্তু অসুখকে জয় করা মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়েছে। ওষুধের নব নব আবিষ্কার মানুষকে বাঁচতে প্রাণিত করেছে। মানবজীবনের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সমস্যা যাচাইয়ের জন্য এমন সব প্রযুক্তি মানুষ আবিষ্কার করেছে যার সাহায্যে শরীরের অভ্যন্তরের ছবি উঠিয়ে সঠিক রােগ নিরূপণ সম্ভব হচ্ছে। শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের এ অসীম অবদানের কথা বিবেচনা করলে মানবকল্যাণে বিজ্ঞানের অবদানের কথা সহজেই অনুমান করা যায়।

যােগাযােগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান:

যােগাযােগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সাফল্য মানুষের জীবনে পরম শান্তি এনেছে। দ্রুতগতিসম্পন্ন ট্রেন আবিষ্কার করে মানুষ হাজার কিলােমিটারের পথকে করেছে নিকট। অত্যাধুনিক কনকর্ড বিমান, সাগরের সুবিশাল জাহাজ মানুষের পথের দূরত্বকে কমিয়েছে বিস্ময়করভাবে। আধুনিক টেলিযােগাযােগ তাে বিজ্ঞানের বিরাট সাফল্য। মিনিটের মধ্যে গােটা বিশ্বের যেকোনাে প্রান্তের সংবাদ নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক স্থানের কোনাে ছবি মােবাইলের বাটন চেপে বীর অন্য প্রান্তে পৌছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। মানুষের জীবনের পরতে পরতে প্রবেশ করেছে বিজ্ঞান । বিজ্ঞান এখন মহাকাশেই শুধু ব্যস্ত নয়। ক্ষুদ্র গৃহকোণেও বিজ্ঞান এখন সেবা দিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর।

বিজ্ঞানের বিস্ময় কম্পিউটার:

যেদিন বিজ্ঞান পৃথিবীকে কম্পিউটার দিয়েছে সেদিন থেকে পৃথিবী তার পুরাতন চেহারাকে বদলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। সকল কাজের কাজী কম্পিউটার। যে কাজ শত শ্রমিকের হাজার ঘণ্টা শ্রমের দ্বারা সম্ভব হতাে সে কাজ মিনিটে করা সম্ভব হচ্ছে কম্পিউটারের কল্যাণে। মানব শ্রমের এ সাশ্রয় পৃথিবীর জন্য একটি বড় ঘটনা বৈকি! কম্পিউটারকে কেন্দ্র করে এখন শুধু কঠিন কাজই যে সহজ হচ্ছে তা নয়, অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্যে কম্পিউটার মহানায়ক। মুদ্রণ কাজ থেকে মহাকাশ গবেষণা – এমন কোনাে কাজ নেই যে কাজের সাথে কম্পিউটার যুক্ত নয়।

মানবকল্যাণে বিদ্যুৎ:

শহরে, নগরে গ্রামে ও পথে-প্রান্তরে যত বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে তা বিজ্ঞানেরই এক বিস্ময়কর অবদান। পৃথিবীর সভ্যতাকে হাজার বছরের পথ এগিয়ে দিয়েছে এ বিদ্যুৎ। বর্তমান বিদ্যুৎসম্পন্ন পৃথিবী আর বিদ্যুহীন একটি পৃথিবী কল্পনা করতে গেলে বিদ্যুতের অবদানকে সহজে অনুমান করা যায়। বিদ্যুহীন একটি দিনও কল্পনা করতে গেলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তাই মানবকল্যাণে বিদ্যুতের বা বিজ্ঞানের এ অবদানকে অস্বীকার করার কোনাে সুযােগ নেই।

বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক প্রভাব:

সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞান অনেক দূর অগ্রসর হতে পেরেছে। পৃথিবীতে বিজ্ঞান যত বেশি অগ্রসর হবে মানবকল্যাণ তত বেশি সাধিত হবে । পৃথিবীকে ধ্বংস করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞান নিয়ে মেতে ওঠেনি। বরং এর কল্যাণকর দিকটির শতভাগ সেবা পাবার জন্য এর শুভযাত্রা সূচিত হয়েছিল। মানুষের শুভবুদ্ধি এবং বিজ্ঞান চর্চা অনাগত দিনেও অব্যাহত থাকবে এবং এর সুফলও মানুষ ভােগ করবে সন্দেহ নেই।

উপসংহার:

বিজ্ঞান উত্তরােত্তর সমৃদ্ধির পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে আর মানবসমাজ ভােগ করছে এর সুফল। পৃথিবী যতদিনথাকবে ততদিন কৌতূহলী মানুষ অনুসন্ধানী মনে বিচরণ করে যাবে বিজ্ঞানের মাঠে। মানুষের এ সাধনার মধ্যেই নিহিত আছে– জগৎ মানবের বৃহত্তর কল্যাণ।

মানবকল্যানে বিজ্ঞান বা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনার সংকেত

  • ভূমিকা
  • ‘বিজ্ঞান’ শব্দটির অর্থ
  • জীবন ও বিজ্ঞান
  • বিজ্ঞানের গুরুত্ব
  • চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞানকৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  • যােগাযােগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  • শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  • প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
  • দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
  • বিজ্ঞানের ক্ষতিকর দিক
  • উপসংহার

মানবকল্যানে বিজ্ঞান বা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা

ভূমিকা :

বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে অভাবনীয় গতি, সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে করেছে দুততরও বহুমাত্রিক। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের জাদুকরী স্পর্শে মানবজীবনের সর্বত্র এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সর্বক্ষেত্রেআজ পরিলক্ষিত হচ্ছে বিজ্ঞানের অব্যাহত জয়যাত্রা। মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান যে কত ব্যাপক তা প্রতিদিনের বিচিত্রঅভিজ্ঞতা থেকে অনুভব করা যায়। বিজ্ঞানের কল্যাণে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এসেছে সুখ, শান্তি ওসমৃদ্ধি।

‘বিজ্ঞান’ শব্দটির অর্থ :

‘বিজ্ঞান’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘Science’, যা ল্যাটিন শব্দ ‘Scio’ থেকে এসেছে।এর অর্থ জানা বা শিক্ষা লাভ করা। আভিধানিক অর্থে বিশেষ জ্ঞানই হলাে বিজ্ঞান। মনীষী স্পেন্সারের মতে, বিজ্ঞান হলােসুশৃঙ্খল ও সুসংবদ্ধ জ্ঞান। অনুসন্ধিৎসু মানুষের বস্তুজগৎ সম্পর্কে ধারণা এবং বিচিত্র কৌশলে তার উপর আধিপত্যবিস্তারের প্রচেষ্টা থেকেই উদ্ভব ঘটেছে বিজ্ঞানের। এটি হয়েছে মানুষেরই প্রয়ােজনে, তার প্রভাব মেটানোর তাড়না থেকে।এভাবে সভ্যতার বিকাশের সহায়ক শক্তি হয়ে উঠার মাধ্যমে বিজ্ঞান ক্রমেই মানুষের জীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে।

জীবন ও বিজ্ঞান :

প্রয়ােজনই উদ্ভাবনের প্রেরণা জোগায়। মানুষের অভাববােধ থেকে বিশেষ জ্ঞান হিসেবে বিজ্ঞানেরউৎপত্তি। তাই জীবনের সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক যেমন পুরােনাে, তেমনি নিবিড়। মানুষের অনুসন্ধিৎসা, জিজ্ঞাসা ও আগ্রহথেকে বিজ্ঞানের বিচিত্র বিকাশ। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংস্কার, বিশ্বাস ও প্রবণতা বদলে যাচ্ছে। আজবিজ্ঞানের দৃষ্টি দিয়ে আমরা সব কিছু যাচাই করে দেখতে চাই, প্রমাণ পেতে চাই অনেক কিছুর। এ জিজ্ঞাসা ও তর্কেরপ্রবৃত্তি আমাদের বৈজ্ঞানিক পরিবেশের ফসল। সুতরাং বিজ্ঞান সম্পর্কে আমরা যতই অজ্ঞ হই না কেন, বিজ্ঞানের প্রভাবআমাদের জীবনের মর্মমূলে প্রবেশ করেছে।

বিজ্ঞানের গুরুত্ব :

মানবসমাজের যে দিকেই দৃষ্টিপাত করা যায়, শুধু বিজ্ঞানের মহিমাই স্পষ্ট হয়ে উঠে। বিজ্ঞানেরবলে মানুষ জল, স্থল, অন্তরীক্ষ জয় করেছে; সংকট নিরসন ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিধানের বন্ধু অভাবনীয় কৌশল আবিষ্কারকরেছে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গৌরবময় অবদান বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে আছে এবং মানবজীবনের উপর এর সুগভীরপ্রভাব পড়ছে। মানবজীবনকে অফুরন্ত সুখে পরিপূর্ণ করে তােলার সাধনায় সদা নিয়ােজিত বিজ্ঞান তার বিস্ময়কর আবিষ্কারচালিয়ে যাচ্ছে অবিরত। এ সাধনা যেমন ক্রমাগতভাবে চলছে, তেমনি তার কল্যাণকর সুফলও নিবেদিত হচ্ছে মানুষের| সেবায়। বিজ্ঞান আজ মৃত্যুকে জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানের কর্মসাধনার পরিণতি হচ্ছে আধুনিক সভ্যতা।বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান হয়ে মানুষ আজ আকাশ ও পাতালকে সাজিয়েছে নিজের পরিকল্পনা অনুসারে। তারা জীবনকে জয়করে মৃত্যুকে পদানত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে নব নব কৌশল ও প্রকরণ প্রবর্তনের মাধ্যমে এ জগতে বিজ্ঞানএনেছে যুগান্তর; দূরকে করেছে আপন আর জীবনকে করেছে সহজ।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান :

চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্যে আজ মানুষ অকাল মৃত্যুর কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। কলেরা,বসন্ত, যক্ষ্মা ইত্যাদি মরণব্যাধির সু-চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে আবিষ্কৃত হয়েছে। উন্নতমানের ওষুধ, অস্ত্রোপচার ব্যবস্থা,এক্সরে, আল্ট্রাভায়ােলেটরে, অণুবীক্ষণ যন্ত্র ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এসেছে এক আমূল পরিবর্তন। উন্নতচিকিৎসা সেবার ফলে শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে, বৃদ্ধি পেয়েছে মানুষের গড় আয়ু। কম্পিউটারকেন্দ্রিক টেলিমেডিসিন পদ্ধতিতে পৃথিবীর যে কোনাে প্রান্ত থেকে যে কোনাে ব্যক্তি উন্নত দেশের ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সুস্থ।থাকতে পারছে। আবিষ্কৃত হয়েছে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। অবলীলায় করা হচ্ছে ওপেন হার্ট সার্জারি, শরীর না কেটেবাইপাস সার্জারি, প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে একজনের অঙ্গ অন্যজনের শরীরে। বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষের জেনেটিক স্বরূপ।উদ্ঘাটনের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে বিজ্ঞানীরা, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে বয়ে আনবে যুগান্তকারী বিপ্লব।

কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান :

আধুনিক বিজ্ঞান কৃষিক্ষেত্রেও অশেষ উন্নতি সাধন করেছে। প্রাচীন ভোতা লাঙলের পরিবর্তেআজ ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের কলের লাঙল ও ট্রাক্টর। ফসলের উৎপাদন ও মান বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিকরাসায়নিক সার। কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের কীটনাশক। প্রকৃতির দয়ার উপর।নির্ভরশীল না হয়ে গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে পানি সেচের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গবেষণার মাধ্যমে সরবরাহ করাহচ্ছে উন্নতমানের বীজ। তা ছাড়া থরা, শীত ও লবণাক্ততা সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন কৃষি উৎপাদনে এক নীরব।বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। ফলে ধান, গমসহ সকল প্রকার খাদ্যশস্যের উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নত জাতেরমাছ, গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি উদ্ভাবনের ফলে এসবের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে অভাবনীয় হারে। এভাবে বিজ্ঞান আজউর্বরতা দিয়ে ক্ষয়িষ্ণু বসুধাকে শস্যবতী করে ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

যােগাযােগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান :

আধুনিক যােগাযােগ ব্যবস্থার পুরােটাই বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। বুলেট ট্রেন, আধুনিককনকর্ড বিমান, মাটির তলায় ধাবমান টিউব রেল সবই বিজ্ঞানের অবদান। বিজ্ঞানের অবদানেই আজ আমরা এরােপ্লেনে।চড়ে শূন্যাকাশে শত শত মাইল পাড়ি দিচ্ছি, যা একসময় ছিল অচিন্তনীয়। তাছাড়া এখন আমরা হাতের মােবাইল টিপেমুহূর্তের মধ্যে পৃথিবীর যে কোনাে প্রান্তে অবস্থিত ব্যক্তির সাথে কথা বলতে পারি, ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদান করতেপারি। সারা বিশ্বের প্রতি মুহূর্তের সংবাদও এখন আমরা মােবাইলে পাই। যা বিজ্ঞানেরই আশীর্বাদ।

শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞান :

একদা মানুষ জীবনের প্রয়ােজনীয় উপকরণ সংগ্রহ ও উৎপাদনে কায়িক শ্রমের উপর সম্পূর্ণনির্ভরশীল ছিল। এতে মানুষের কাজ করতে অধিক সময় ও শ্রমের প্রয়ােজন হতাে। কিন্তু এর তুলনায় কাজ হতাে কম।বিজ্ঞানের কল্যাণে শিল্পবিপ্লবের ফলে কলকারখানা স্থাপিত হয়েছে, বেড়েছে উৎপাদন, লাঘব হয়েছে মানুষের কায়িক শ্রম।উৎপাদনের সর্বক্ষেত্রে আজ বিরাজ করছে যন্ত্রের আধিপত্য। ফলে মানুষ পেয়েছে স্বস্তি ও আয়াসপূর্ণ জীবন। শত মানুষেরআন্তরিক প্রচেষ্টায় যা আগে করার চেষ্টা করা হতাে এখন তা যন্ত্রের বােতাম টিপে মুহূর্তের মধ্যে সম্পন্ন করা যাচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে মানুষের কর্মের স্থানটিও দখল করে নিচ্ছে কর্মী রােবট।

প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান :

বিজ্ঞানের কল্যাণস্পর্শে প্রকৃতির অনেক ধ্বংসাত্মক দিককে মানুষ কল্যাণকর দিকেপরিবর্তিত করতে সক্ষম হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, নদীশাসন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মানুষ আজ বিজ্ঞানের বদৌলতে অভূতপূর্বসাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উইন্ডমিলের মাধ্যমে মানুষ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশিআরও অনেক কিছু করছে। মােটকথা, বিজ্ঞানের কল্যাণে একসময়ের ভয়ংকরী প্রকৃতি আজ শুভংকরী প্রেয়সীতে রূপান্তরিতহয়েছে।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান :

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে স্বাচ্ছন্দ্য ও আরাম-আয়েশ। রেডিও,টেলিভিশন, সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিক বাতি ও পাখা, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি, বৈদ্যুতিক হিটার ইত্যাদি।আবিষ্কারের ফলে আমাদের জীবনযাত্রা অত্যন্ত সহজ ও আরামদায়ক হয়ে উঠেছে। অফিস-আদালতে নিত্য ব্যবহৃত হচ্ছে।কম্পিউটার, ফটোস্ট্যাট মেশিন, টেলেক্স, ফ্যাক্স ইত্যাদি যন্ত্রপাতি। এমনিভাবে বিজ্ঞান মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কত রকমপ্রয়ােজন যে মেটাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই।

বিজ্ঞানের ক্ষতিকর দিক :

বিজ্ঞান একদিকে যেমন মানুষের অশেষ কল্যাণ সাধন করে আসছে, অন্যদিকে তেমনিএনেছে বিভীষিকা। যন্ত্রের উপর নির্ভর করতে করতে মানুষের জীবনে এসেছে যন্ত্রনির্ভরতা, কর্মবিমুখতা। এটি অনেক।ক্ষেত্রে বেকার সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে। ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনের মতাে আধুনিক প্রযুক্তির হাত ধরে অনেকক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ ঘটছে বিজাতীয় অপসংস্কৃতির। এতে করে যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। রাসায়নিক ও পারমাণবিকঅস্ত্রের ব্যবহার আজ মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের মুখােমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে। মিসাইল, বােমারু বিমান, ট্যাংক, সাবমেরিন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে মানবজীবনে বিজ্ঞান অভিশাপে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার বােমাবর্ষণের পর জাপানের হিরােশিমা ও নাগাসাকি শহরের ধ্বংসযজ্ঞ তারই বাস্তব প্রমাণ।

উপসংহার :

বর্তমান সভ্যতার মূলে রয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান আমাদের জীবনে এনেছে সুখ-সমৃদ্ধি এবং আমাদেরদৈনন্দিন জীবনকে করেছে গতিময়। মানব জাতি বর্তমানে প্রতি মুহূর্তে প্রতি পদক্ষেপে বিজ্ঞানের কাছে দায়বদ্ধ। বিজ্ঞানেরযথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে অদূর ভবিষ্যতে মানব সভ্যতা সমৃদ্ধি ও উন্নতির চরম শিখরে আরােহণ করবে।

আরো পড়ুনঃ বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব রচনা

3.9/5 - (36 votes)

You may also like

1 comment

Sougata Saha November 22, 2022 - 10:29 pm

It is best for students. Class 7 to 10 all students do it.

Thanks 🙏🏻
-Sougata.

Reply

Leave a Comment